Wednesday, January 23, 2008

পথিক


সামনে
হেলিয়া দুলিয়া চলিল কতক চিত্রা হরিণীর জোড়া
পিছনে
পড়িয়া থাকিল নিশ্চুপ, আমার একটি মাত্র ঘোড়া...।।



অসুখ

ভালবাসা কেঁপে কেঁপে উঠে
মস্তিষ্কের রন্ধ্রে রন্ধ্রে
তাকাব না তাকাব না তবুও
চোখাচোখি অন্ধে...।।


সংলাপ


বাইচোত্‌ যতই বলো
তুমিই আসলে বোকাচোদা
আমি কিন্তু নই...।।




ফিলিংস্‌

যে গ্লাসে জলপান
যে গ্লাসে দুধচান
সেই গ্লাসেই মদ খান
নেই পাত্রে মৃত্যুবাণ...।।
ক্ষমতা

যেমন তুমি চাইলেই অনেক পার না
তেমনি তুমি না চেয়েও অনেক কর
কিন্তু তা জান না...।।





স্বীকারোক্তিনামাঃ১

নেশার ঘোরে মাতাল হই
স্বপ্ন ক্রয়ে বেঁচে রই
মানুষ খুঁজি,মানুষ কই?
পরাস্ত পটে মিথ্যুক নই
জানি বলেই বলি
এক যোগ এক দুই
আমি
লিঙ্গ দিয়ে মনকে ছুঁই...।।












স্বীকারোক্তিনামাঃ২

“হালার পুতে খালি ভাব দেখায় ভিত্‌রে কইলাম এক্কেরে সদরঘাট”

স্বীকারোক্তিনামা>

আমি স্বীকার করিতেছি যে,আমি ভাবে থাইকে ভাব লইয়া ভবের মেলার ভাব সাগর বৈতরনীতে ভুজং ভাজুং ভাবের ঠেলায় ভরাডুবির পর ভুস করে আবার ভেসে উঠি
এবং নতুন ভূমিষ্ট প্রাণে ভাবি আর কি কি ভাবা যায় অতঃপর ভাবের আকাশে ভাব না খুঁইজে না পাইয়ে অতি ভাবালুতায় ভাবের পাতাল তন কিছু আলগা ভাব লাগাইয়ে গতর ভার করে চলি ভ্রষ্টাচারে কিংবা ভৈরবীর খোঁজে তথাপি ভাবের ভরে ভরবেগ বেশি বলে ভটভটি মার্কা শরীরে গতির ভীষণতায় বিভীষিকা দেখি ফলাফল পথিমধ্যে ভয়ংকর উস্টার বদৌলতে ভূ আশ্রিত হলে আসপাশ হতে আওয়াজ আসে-

“হালার পুতে খালি ভাব চোদায় আতলামি মারায় ভিত্‌রে কইলাম এক্কেরে সদরঘাট”


হ আমিওতো তাই কইলাম তবুও সদরঘাটতন কিন্তু মেলা জায়গায় যাওনের স্টিমার লঞ্চ ছাড়ে,বোঝা মুসকিল, পানি দিয়া যাওনের দিন কইলাম এখনও শেষ হয় নাই পৃথিবীর বেবাকটা এখনো পানির দখলে তাইতো উপর দিয়া ভাব লই ভাসার ভাব, ভৈরবীর তরে


আহ্‌ ভৈরবী!

পুরাণ-দ্বিতীয়

ছল কর জানি
পছন্দ কর জানি না
এড়াতে চাও জানি
দেখতে পার না জানি না
আড়ালে হাসো জানি
ভালবাসো জানি না
অজানার আগে পরে ঘিরে থাকে জানা অজ্ঞতা
কে তোমায় জানলো
চেনালো নারী...।।

পুরাণ-প্রথম,

ছল কর জানি
পছন্দ কর না জানি
এড়াতে চাও জানি
দেখতে পার না জানি
আড়ালে হাসো জানি
ভালবাসো না জানি
কিন্তু এতো কঠোরতা
কে তোমায় চিনলো
বললো নারী...।।

কপটতা

তোমার কাছে কে কবে চাইলো
অমূল্য রতন
সবাই বসন্তের কোকিল যদি হবে
কেন শুধু মুক্তো ছড়ানো উলুবনে তবে
তাইতো ভাব, তাইনা?
মুক্তো থাকলে তবেই না ছড়াবে
যখন এই পটে চলছে তীব্র ঝিনুকের সংকট
তবুও যদি পেয়ে যাও একটি কি দু’টো
তখন দানের ময়দানে বীরাঙ্গনা
রটবে কি এমন ঘটনা?
বোধকরি তাই চাও,ফলাফল
বন্ধু বলে মেনে নাও কষ্ট দিতে বাধেঁ
কষ্ট দিতে চাওনা-কিন্তু
আশা দাও কেন?

Friday, January 4, 2008

‘জটিলেশ্বরের ব্যক্তিগত জটিলতা’

গল্প > রোকন রহমান
চিত্রনাট্য > শঙ্খগ্রীব
পরিচালনা > তারেক কাওছার


(প্রথম খসড়া)
Copyright > শঙ্খ’০৭



১।১
দৃশ্য শব্দহীন সংলাপ –

লিখাটি ফেইড আউট হবে, ব্ল্যাক স্ক্রীনে সাদা কালি


১.২(ইন্টেরিয়র,রাত)

ঘরের মাঝখানে, একপাশে পড়ার টেবিলে স্পট লাইট থাকবে। ওই আলোতে পুরো ঘরটি একবার দেখা যাবে, মোট চারটি খাট থাকবে যার তিনটিতে কেউ না কেউ শুয়ে থাকবে। আলোকিত টেবিলের পাশের খাটটিতে দেয়ালে ঠেস দিয়ে বসে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়ে জটিলেশ্বর!

১.৩
জটিল হে, একগ্লাস পানি দাওতো! –

লিখাটি ফেইড আউট হবে, সাদা স্ক্রীনে কালো কালি

১.৪(ইন্টেরিয়র,রাত)

কপালের ঘাম মুছতে মুছতে জটিলেশ্বর স্বগতোক্তি করতে থাকেন...

জটিলেশ্বর :
কি যে করছ কিছুই বুঝিনা ,এতো গ্যাজানোর কি আছে...ঘটনার কোন অনিবার্যতা নেই।

একটু হাসবে...উত্তেজিত হয়ে সোজা হয়ে বসবে

কি হইব ঐ সব আন্দোলনফান্দোলনে তোগতো পুরুষত্বই নাই আবারো চাইয়া দেখ ওই অংগটা আছে কিনা কে জানে, দেখ শেষ পর্যন্ত কি হয়...

জটিল আবারো দেয়ালে ঠেস দেয়...সিগারেটের ধোঁয়ায় রিং বানায়
কাট্‌
২.১(ইন্টেরিয়র,রাত)

জটিল টেবিলে বসে কিছু লিখার চেষ্টা করে...তার কাঁধে কেউ একজন হাত রাখে, জটিল পেছনে তাকায়

জটিলেশ্বর :
কে?
পেছনে আরেকটি টেবিলের উপর স্পট লাইট জ্বলে উঠে...তাতে একজন লোককে দেখা যায়

লোকটি :
কেমন আছ?
জটিল :
বাবা !এত রাতে?
বাবা :
রাত আর কত রাত...আমাদের কি রাতে চলাচল করতে নেই?
জটিল :
না, না তা হবে কেন? হঠাত্‌ এতদিন পর, এইসময়ে...আমায় দেখতে এলে?
বাবা :
প্রত্যাখনের অফুরন্ত সময় পেরিয়ে সুখী হতে চেয়েছিলাম...
জটিল :
তুমি কি সুখী ছিলে না
বাবা :
কে জানে, কার কাছে সুখের সংঞ্জা কি? এলাম বলে রাগ করেছ?
জটিল :
রাগ হবে কেন? তুমিনা আগের মতোই রয়ে গেলে। তুমি এলে বরং ভালোই লাগে,জানতো?
বাবা :
হু, তা বেশ জানি।
জটিল :
সবাই কেমন আছে?
বাবা :
আমার কথা জিঞ্জেস করলে না? দাও, এক গ্লাস পানি দাও, বড় তৃষ্ণা...

জটিলেশ্বর পানির বোতল নিয়ে পিছনে তাকাতেই সব অন্ধকার

জটিল :
শালারা সব পানি খেতে আসে,কথা বলার সময় নাই। সব শালা বাইঞ্চোত্‌।

জটিল পানির বোতল ছুঁড়ে মারে, ঝন ঝন শব্দ হয়, বিছানায় শুয়ে থাকা লোকটি আবাক চোখে তাকায়
আবার শুয়ে পড়ে
কাট্‌
৩.১(কন্টিনিয়েশন)
তুমি বন্ধু কেমন বন্ধু...বন্ধু থাকনা...

লিখাটি ফেইড আউট হবে,ধূসর স্ক্রীনে সাদা কালিতে

৩.২(কন্টিনিয়েশন)

টেবিলে চুপচাপ জটিল, কিছুক্ষন মোবাইলে গ্যাজানোর চেষ্টা... কিছু লিখার চেষ্টা... ঘুম না আসায় বিরক্ত

জটিল :
শালার ঘুম কি একবার আইসা কথা কইতে পারেনা?

সাথে সাথে আরেক টেবিলের উপর লাইট জ্বলবে, তাতে একটা লোক দেখা যাবে

লোকটি :
কিরে দোস্ত ঘুমাস নাই? রাইত ২টা বাজে
জটিল :
আরে তুই? কহন আইলি?
বন্ধু :
বহুতক্ষন,শালা দেখলামতো মধ্য রাতের পাখির সাথে কথা বলছ খুব। এই কাম! রাতে রাতে প্রণয়
জটিল :
ধূস শালা,ওতো কবেই হাওয়া...তুই কেমন আছিস?
বন্ধু :
আমার খবর নেওনের মানুষ কই? আছতো পাঙ্খা...পরকীয়া চলছে খুব
জটিল :
জানিসতো ঐ শব্দটাতে আমার আপত্তি আছে
বন্ধু :
বাদ দে ওসব, দিনকাল কেমন চলে? কতদিন পর ... একটা চিঠিও দিলিনা।
দিনে দিনে একটা ছাগল হইতাছস্‌
জটিল :
এখন আর লিখতে পারিনারে...ভালো লাগেনা কিছুই
বন্ধু :
দে,দে একটা বিড়ি দে, আগুনটাও দে...এখনও আগের ব্র্যান্ড

দু’জন ধূমপানরত...সারা রুম ধোঁয়াতে অন্ধকার হয়ে পড়ে, কারো মুখ দেখা যায় না
জটিল
কতদিন পর একসাথে বিড়ি খাইতেছিরে,আহ্‌। আজ অনেক গল্প হবে, কি বলিস খোকন?
কোন উত্তর আসেনা, টেবিলের বাতি নিভে যায়, ধোঁয়ার আস্তর থাকেনা, তখন চিৎকার করে উঠে জটিল।

জটিল :
খোকন খোকন।

অন্যপ্রান্তে একজন লোক চমকিয়ে উঠে বসে,বিড় বিড় করতে থাকে,জটিলেশ্বরের সাথে চোখাচোখি হতেই...

লোকটি :
শালার পাগল ছাগল!

জটিল কোন কথা বলে না,নিরবে মেঝে থেকে একটা সিগারেট ও দিয়াশলায়ের বাক্স উঠিয়ে নিয়ে আবার টেবিলে বসে...হঠাৎ চিৎকার করে



জটিল :
পাগল ছাড়া শালারা বাচঁতে পারবি?
কাট্‌
৪.২(কন্টিনিয়েশন)

জটিল আবারো টেবিলের সামনে বসে থাকে। একটা কবিতা পড়ে

জটিল :
একটা দিয়াশলাই জ্বালাতে দশ বিশ বছর চলে যায়
নাম ধরে ডাকাডাকি, ভিড়ের ভেতর খোঁজাখুঁজি,
এসব অনেক আগেই মিটমাট হয়ে গেছে...
একটা দিয়াশলাই জ্বালাতে দশ বিশ বছর লেগে যায়।

জটিল :
কি কবিতারে বাপ!হুবহু ব্যাক্তিগত সমীকরণ! শালা লেখে ভালো যদিও চালবাজ বেনিয়াদের দলে,তবুও থাকুক।বাংলায় কবিতা থাকুক।
এই শালা ঘুম বেটার কি হলো?
কাট্‌
৫.১(কন্টিনিয়েশন)

আবারো মানুষ নাকি পতঙ্গে রূপান্তরিত হতে যাচ্ছে...।

লিখাটি ফেইড আউট হবে,হলুদ স্ক্রীনে কালো কালিতে


৫.২(কন্টিনিয়েশন)
জটিল :

উত্তেজিত
সত্যি! তবেতো কেল্লা ফতে। বিজ্ঞান কী তাই বলছে আজকাল!

৬.১(কন্টিনিয়েশন)
প্রেম,প্রেম ভালবাসা...।

লিখাটি ফেইড আউট হবে, আকাশী স্ক্রীনে কমলা কালিতে।

৬.২(কন্টিনিয়েশন)

মৃধু নূপুরের শব্দ
জটিল :
কে?

হঠাৎ জটিলের টেবিলের সমান্তরালে অন্য টেবিলে আলো জ্বলে উঠে। একটা মেয়েকে দেখা যায়।মেয়েটি ও জটিল একান্তরে মুখোমুখি।
মেয়েটির হাসি শোনা যায়
মেয়েটা :
তোমার বন্ধুটি বাজে লোক...
জটিল :
কি বল? ও বাজে নয়, সময় বাজে। কেমন আছো?
মেয়েটা :
আছি,যেমন ছিলাম...
জটিল :
ভালো থাকলে না কেন?
মেয়েটা :
আমাকে তো আর রাখতে পারলে না
জটিল :
তোমার আমার সম্পর্ক তো অন্যরকম,মানে ইয়ে...
মেয়েটা :
অন্যরকম মানে কি? যত্তসব ভন্ডামি।।

মেয়েটি উঠে চলে যেতে থাকে, নূপুরের শব্দ ফেইড আউট হতে থাকে

জটিল :
তুমি কি চলে যাচ্ছ? শোন, সোমা, শোন না একবার......

হঠৎ সব অন্ধকার হয়ে যাবে,জটিল মোম্বাতি জ্বালায়, এক খন্ড আগুনের পিন্ডের সামনে তার চেহারা ছাড়া কিছুই দেখা যাবে না
জটিল :
সত্যি সত্যি চলে গেল!
দূর শালা ঘুম,কই গেছে?কখন থেকে বইসা আছি
কাট্‌



৭.১(কন্টিনিয়েশন)

হাওয়ায় উড়ছে ধবল,আহ্‌ ধবল
মৃত এক পালক
যদিওবা খন্ডিত অমল, আহ্‌ অমল
মিথ্যা এক কৃষ্ণ যাজক!

লিখাটি ফেইড আউট হবে,ধূসর স্ক্রীনে কালো কালিতে।
৭.২(কন্টিনিয়েশন)

মোমবাতির আলোয় জটিল কবিতাটা লিখা শেষ করবে

জটিল :
ভালোই হইছে

দূর থেকে একটা আওয়াজ আসবে

কে ওখানে ?

৭.২(কন্টিনিয়েশন)

কেঊ থাকেনা কখনও, কোনকালে থাকে না কেউ...

লিখাটি ফেইড আউট হবে,লাল স্ক্রীনে নীল সবুজ কালিতে।

৭.২(কন্টিনিয়েশন)

জটিল :
আমি, আমি জটিলেশ্বর, আপনি হঠাৎ...

একটা লোক জটিলের সামনাসামনি বসা, বেশভুষায় চে’ গুয়েভারের মতো...মাথায় তারকা চিহ্নিত ক্যাপ

লোকটা :
হ্যা আমি। বেশ সুখেই আছ দেখছি
জটিল :
কি যে বলেন? বিশ্রী এক অলস সময়
লোকটা :
কিছুত করছো না,আর পারবে বলেও মনে হয়না
জটিল :
আসলে সারা দুনিয়ায় সমাজতন্ত্র এমন অবস্থায় ফেললো না...
লোকটা :
তাই নাকি? বাড়ির পাশেইতো অনেকে লড়ছে।বুঝেছ,এইসব কথা আমদের কালেও তোমাদের মত কেউ কেউ বলতো
জটিল :
মানে সময়টা...
লোকটা :
বল তোমাদের সময় নেই।কৌশল বদলেই বিভ্রান্ত করে দিল তোমাদের
জটিল :
কেঊ যে নেই

লোকটা :
কেউ থাকেনা কখনও,কোনকালে থাকেনা কেউ!

হঠাৎ আলো জ্বলে উঠে জটিলের টেবিলে।তখন কাঊকে দেখা যায় না। ক্যামেরা ধীরে ধীরে দেয়ালে সেঁটে থাকা চে’র ছবিতে জুম ইন হবে।