Wednesday, October 31, 2007

দিনলিপি – পূজো ১৪১৪(Durgapuja Festival at Pune,India)

পূজো দেখতে গিয়েছিলাম গতকাল...আজও......দূর্গাপূজা.....পুণে।
গতকাল কালীবাড়ি আজ কংগ্রেস ভবন।
এই দুটো জায়গায় পুণের বাঙ্গালি বাসিন্দারা পূজো উদযাপন করছে...এলাহি কারবার।
গতকাল কালীবাড়ি... পূজোর মন্ডপ আহামরি তেমন কিছু ছিলনা অন্তত আজকের কংগ্রেস ভবনের মন্ডপের কাছে...তারপরও লোক সমাগম নেহায়েত মন্দ ছিলনা আর হবেই না কেন যখন সব কিছুর পর(আগেও হতে পারে)
একটা বাণিজ্যিক চাহিদা কিংবা উদ্দেশ্য থাকে...।
গতকাল সেখানে নাটক মনচায়িত হয়েছিল...অংশগ্রহনে কলকাতা হতে আগত শিল্পীরা যারা সেখানে টিভি সিরিয়ালে অভিনয়ে পারদর্শী...দেখা হয়নি তাদের অভিনয়...তার আগেই ওই জায়গা হতে বিদায় নিয়ে ছিলাম তবে শুরতে দুটো গান শোনার সৌভাগ্য হয়েছিলো...হায় গান সোনার গান তুমি আর এসোনা...দ্বিতীয় গানের আগে জনাব গায়ক সাহেব গানের শেষ লাইন দুটো মনযোগ দিয়ে শোনার জন্য অনুরুধ করেন......রেল গাড়ি যায় চলে ঝিক ঝিক(আগে এইটা জানতাম না!)...একদমই বাজে ... যেমন শিল্পী তেমনই সাউন্ড সিস্টেম
আচ্ছা কালীর মন্দিরে দূর্গার পূজো...কালী মাইন্ড করতেছে নাতো ?
আমার বন্ধু সৈরন চাকমা জানতে চাইলো
মাইন্ড করলে সাইন করা যায়না
গতকাল অষ্টমী ছিলো... আজ ওখানে ম্যাজিক শো হবার কথা...দশমীর দিনে হবে বোম্বের হট... শট...নটি... বটি...নায়িকা তনুশ্রী দত্তের ব্যলে(বালের) ড্যান্স............ইস্‌
পূজো কম্পাউন্ডে ছিল বেশ কিছু খাবারের স্টল...... যা ছিল নামেই বাঙ্গালী কিন্তু বিক্রি হচ্ছিলো সব চাইনিজ্‌, জাপানিজ্‌ খাবার...কাবাবের আইটেমও ছিল বেশ.........পূজোয় নন ভেজ!
আজ নবমী তে কংগ্রেস ভবনে...আয়োজন বেশ... অন্তত ধূমপানের জায়গা হতে স্টেজ দেখা যাচ্ছিলো...একটা কমিক রিলিফ
চন্ডালিকার আয়োজন ছিলো...জীবনে এই প্রথম চন্ডালিকার ভিন্ন রকম পারফমেন্স দেখলাম...ভিজুয়্যাল ও সরাসরি থিয়েট্রিক্যাল(এনালগ) কম্বিনেশন...মাল্টিমিডিয়া থিয়েটারও বলা যায়।
আমার কিছু বন্ধু বান্ধবও জুটলো...পুণে ফিল্ম ইন্সটিউটের...বেশীর ভাগই কলকাতার...
আমার বাহকের বাসায় ফেরার কোন তাড়া না থাকলেও তার তাড়নে ত্বরণ জুগিয়ে আমাকে সেই সময় বিদায় নিতে হয়েছিলো...... পূজো কম্পাউন্ডে বোধকরি নড়নক্ষম...চলনক্ষম দেবীর অভাব...এবং তার আক্ষেপ...বিক্ষিপ্ত হয়েছিলো তার চলে আসার পথে মটরবাইকের ভট ভট শব্দে

আগামীকাল দশমী......এবং আমি কাল কোথাও যাব............... না।।

গতকাল বাসায় ফিরার পথে আমার বাহকের একহাতে ছিলো দা লিভিং গড ......বই অন্য হাতে ছিল অ্যালকোহলের বোতল...কম্বিনেশন! .........মাতাল না হলে কি কর্মে ধর্ম আসে ?

তথাপি দেবী দর্শনে গিয়ে দেবীর সম্মুখে স্বল্প বসনায় অপ্সরার নৃত্যের উত্তেজনায় আমি ছিলাম উত্‌মেজিত চরমভাবে পুল...কিত্‌.........চোখতো শুধু এক জায়গাতেই আটকে ছিলো......কি নৃত্যই না ছিলো...........................।।

সোলায়মান নামা


আলাল দুলালের পালা, আমিনা সুন্দরী কিংবা সুনাই কইন্যার পালা ঘুরে ঘুরে নানান রংঙের দিনগুলি যখন কাটছিল তখন তিন রোস্তমের গপ্পো করে এক ঘোড়া এলো শহরে আর আনলো রাক্ষস খোক্কস - যুদ্ধের মোকাবিলায় মুখোমুখি কংস সাথে ছিলো তালপাতার সেপাই তবুও-
গনি মিয়া একদিন জেনে নেয় এই দেশে এই বেশে আজও আমোদিত জনতার শত্রু
আহ কমরেড! হলোনা কিছুই মিছে তোমার কবর ব্যর্থ তোমার ইঙ্গিত
সোজন বাদিয়ার ঘাট ছুয়েঁ ছুয়েঁ সময় আজ দুঃসময়
ষড়যন্ত্র আর ধনতন্ত্র এর বিবাহ সমাচার তাতে গনতন্ত্রের বার্থ ফ্যান্টাসি
শুরু হয় এলেকশান ক্যারিকেচার
তাকে ঘিরে খমতা ধর্ষনের আয়োজন
বড় ব্যস্ত ইন্সপেক্টর জেনারেল
চলে কাচাঁ-পাকা বাজারে পাবলিকের কোট মার্শাল
শিকল পড়িয়ে দাও কন্ঠে চুপে আছে খ্যাপা পাগলার প্যাচাল
কই যাব? বুদ্ধি কুলোয় না
দুই যোগ দুই এর হিসেব মিলেনা খান্দানি কিসসা ও শেষ হয়না
তবু তুমি বলেছিলে- স্বপ্ন দ্যাখো মানুষ কাল সকালে’র পর আবার
আসবে সূয্যি মামার বরযাত্রী তাদের বরণেই দূরে দাঁড়িয়ে থাকবে
গোলাপ হাতে গোলাপজান //


খৃষ্টাব্দ’২০০৭।


নাট্যকার,নির্‌দেশক-এস এম সোলায়মান নির্‌দেশিত সকল নাটকের নাম নিয়ে এই নামা তৈরী ।।

পুরাণ প্যাঁচাল গন্ধ

না মজিয়া প্রেমে
রসিক হওয়া যায়না
নিজেকে চিনতে
লাগে যেমন আয়না
তেমনি -
সাধন বিনে মুক্তিও মেলেনা
সাধন,আয়না,প্রেম
একই ছবি ভিন্ন ফ্রেম...।।


খৃষ্টাব্দ’২০০৭।

নাগরিক কাপুরুষতা

বলবো বলবো করে বলা হলো কই?
বলবো বললেই বলা হয় না
যেমন অনেক জেনেও জানি পরে আছি শূন্যে
কিন্ত বলতে গেলে জানতে হবে কেন?
কোনটা চাই
বলতে না জানতে
বলাতে না জানাতে
বিষয় গুলো কিরকম ব্যাস্তানুপাতিক!
পীড়নে অস্থির আমি শুধু বলতেই চাইলাম
বলবো জেনে ঘর ছাড়লাম
দু’পা এগুতেই ট্রাফিক সিগন্যালে পড়লাম
ট্রাফিক পুলিশের দৃষ্টি আমার উপর পড়লো
বেটা বড়ই বেরসিক
আমার ছিলো গোলমেলে কাগজপত্র
ছিলো না লাইসেন্স
তার ছিলো না কমনসেন্স
বলে কিনা এই মামলায় ঘুষ চলেনা
বিশ্বাস হয়!
সেও ছাড়লো না
আমারও আসা হলো না
গোল দিতে চেয়েছিলাম
ফাকাঁ রেখে নিজের ডিফেন্স
তোমাকে বলবো বলেছিলাম
সেদিনও বলা হলো না ......।।



খৃষ্টাব্দ’২০০৬।

কামনা

তুমি আমার হয়ে আমায় দেখোনি
দেখেছো যেভাবে-
হেসেছো সেইভাবে
শব্দ শুনিনি - দূরে থাকি
কিন্তু মেঘ ফুঁড়ে
ঐ ঝলকানি ঠিকই দেখেছি
তুমি তোমার করেও আমায় চাওনি
ইস্‌ যদি চাইতে!


খৃষ্টাব্দ’২০০৭।

অতিথি

একবার তোমার ডাক এসেছিলো
তাতে তোমার ঠিকানা ছিলনা
আমি উত্তর দেইনি,
এইবার তুমিই এলে – বাস্তবিক তুমি, বললে -
সুদূর সাইবেরিয়া হতে উড়ে এলাম
শুধু উষ্ণতার খোঁজে নই
চাই আরো কিছু
কি ভেবে পাওয়ার আশা কর
রাজারই যখন অন্ন নাই ।।

খৃষ্টাব্দ’২০০৫।

উপলব্দি

আমি জানি তোমাকে
আমি জানিনা
কে?
যখন দেখি- তোমার
চুলের প্রশংসায় সবাই সপ্তমুখ
কেউ কেউ আড়াল খোঁজে
হারাবে বলে-
কেঊ আবার তার ছায়ায়
নিদ্রা নিতে চায়
তখন মনে হয়- আমি কি জানি?
তখন আমি মোটেও এইসব বলি না
আমার নিদ্রায় বালিশ প্রয়োজন
অতঃপর শ্যাম্পুর ঘ্রান ততটা
সহায়ক নয়-
অন্তত ঘুমের সময়
চুল তোমার বেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা
আমি সেই কাথাঁও বুনিনা
আমি জীবনানন্দও নই।
তোমার চোখ,আখি,নয়ন, নেত্র
ভালবাসার পটভূমি
দৃষ্টিকর্তার মানস পটের
হাহাকার, নয়-ছয়, দিগ্বিদিকতা
যেন ঐ চোখের উত্তল লেন্সে
একীভূত হয়ে আশ্রয় খোঁজে
আরও গভীরে- যেখানে
সমুদ্র-মহাসমুদ্র-উপসমুদ্র
দৃষ্টিকর্তা পৃথিবীর এক ভাগ স্থলে দাড়াঁয়ে
তোমার চোখের আড়ালস্থ পৃথিবীর তিন ভাগ জলকে-
আশ্রয় করে
ঢেউয়ে ঢেউয়ে লুটোপুটি খেলে
তবুও আমি এইসব ইংগিত করিনা
আমি সাতাঁরে আনাড়ি
পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলো
আমি তাও বলিনি
পাখি নই-সেই নীড়ও তাই অর্‌থহীন
তোমার চোখ, চুল, ওষ্ঠ- ব্যক্তি তুমি
গুনমুগ্ধ করেছো সবাইকে
এই সবাইতে - সকলেই আছে
যারা ভাবে সৌন্দর্যে জ্বলসিত-
তুমি এক পৌরাণিক দেবী
আমি চিনিনা তাকে
আমি চিনি
তুমি দেবী ছিলে
তুমি কখনই দেবী ছিলেনা।

খৃষ্টাব্দ’২০০৭

কথোপকথন


তোমার চোখতো এমনি সুন্দর
-জানি
তারপরও কাজল কেন ?
-তাতে সমস্যা?
বিন্দু মাত্র নেই বরং ওগুলো আরও স্বপ্নীল হয়ে উঠে
-তাহলে !
তাহলে সবাই তোমার চোখে চোখ রাখে
-রাখতে কি মানা ?
কখনোই নয় কিন্তু আমার ঈর্ষা হয়
-ঈর্ষা!
হ্যা তাই , তুমি কি এই ঈর্ষার মানে বোঝ ?


খৃষ্টাব্দ’২০০৬।

Tuesday, October 9, 2007

দিনলিপি - জন্মদিন




গত বছর একটু অন্যরকম ছিলো । একটু রঙ্গীন । এইবার সাদাকালো ।
আজ আমার জন্মদিন মানে জনবার্‌ষিকী ১৪১৪ এবং অবশ্যই সেটা শুভ ।
গত বছর জন্মরাত পালিত হয়ে ছিলো মানে কেক কেটেছি ৯ টায় যা ছিল পি.এম এইবার ১২ টায় তবে এ.এম । সেবার ছিল মিনি পার্‌টি এবার বেলে মাটি ।
বাসা থেকে গতকালই ছোটবোন শুভেচ্ছা পাঠিয়েছে - আজ বাবা বাসায় থাকবে না তাই বেচারী মুঠোফোনও পাবে না আমাকে উইস্‌ করার জন্য – আজকালের ছোটবোনেরা এই ব্যাপার গুলোতে বেশ কেয়ারিং – ২০০৭ সাল ।
কোন প্রস্তুতি ছিল না রুমমেটদের বলেছিলাম সামনে ঈদ তাই ঐ দিনেতে জন্মবার্‌ষিকী পালন করি
কিন্তু তেমনটা হয়নি-
একটা হাফপেন্ট আর টি শার্‌ট পরে শুয়ে ছিলাম, অন্ধকার ঘরে শুধু অফুরন্তু প্রাণশক্তির ধারক আমার মোমবাতি গুলো জ্বলছিলো – মনে মনে অনেক কিছু ভাবছিলাম- দেশ, মাটি আআকাশ,পাতাল,আমি,তুমি,সে আর শুধুই ভবিষ্যত এবং ১২ টা বাজতে চললো বৈকি,
আমার ঘরে ততক্ষনে হাজির আমার সব রুমমেটরা সাথে মনজিন্‌সের বিখ্যাত ব্লেকফরেষ্ট কেক
ফুঁ দিলাম- কেক কাটলাম – মুঠোফোনে ফটোসেশন চলল
তারপর আড্ডা কিন্তু কোন জলযোগ ছিলনা
একটা sms আসলো – রোকসার (ইরান) সারা জীবনের জন্য শুভ কামনা
একটা ফোন আসলো – দেবাশীষ (পুণে ফিল্ম ইনিস্টিটিউট) সারা জীবনের জন্য শুভ কামনা
একদিনের জন্য সারা জীবন!
আড্ডা চলছে
এক সময় ঘুম
সেহ্‌রী খেতে উঠলাম
তারপর পুরা দিন ঘরে ঘুমিয়ে ফ্লাট- বাইরে গেলেই মানুষ খাওয়াও – পয়সা .......
দেশ থেকে বিনা ভিসায় একটা সেলুলার বার্‌তা যার শুরুটা- হারামজাদা উইসিং ইয়উ এ ভেরী হ্যাপি... শিমুল আপা (থিয়েটার আর্‌ট ইউনিট)
দলের এজাজ ভাইও শুভেচ্ছা জানিয়েছে ফোন করে – জন্মবার্‌সিকী শেষ হবার মিনিট সাতেক আগে
ইফতারের পর নেটে একটা কাব্যিক ইমেইল পেয়েছি তবে সেটা কোন ফিমেইলের নয়...হায় কপাল!
তাক্‌সীম পাঠিয়েছে – আমার জাবি’র রুমমেট...শ্রেণীকক্ষমেট...কম্বলমেটও
দু’মাস হয় ব্যাঙালোর এসেছে একটা থিসিস্‌ প্রজেক্টে...একই দেশে আছি...আজও একটা ফোন করেনি
চরম উদমাচাঙা- আমি নাকি তার সবচেয়ে কাছের.........! থাক্‌ ইমেইলেই অফ যাই ।
গতবার এইদিন পালনে আমার কিছু প্রমিলা বন্ধু সাথে ছিল তাদের স্মরণ করলাম তাদের কেউ কেউ ভুলে গিয়েছিলো…. মনে করিয়ে দিলাম—কিছু সরি সহ যেচে যেচে অনেকের কাছ থেকে শুভেচ্ছা নিলাম ......শেষ সময়ে ।
দেশে কখনই আমার কোন জন্মদিন পালিত হয় নি
এটা ছিল আমার জীবনের দুইমাত্র জন্মবার্‌ষিকী পালন
এবং তা পরদেশে...



অক্টোবর খৃষ্টাব্দ’২০০৭।

Friday, October 5, 2007

কাঙ্গাল

তোমার হাতের আংটি হবো না
হবো কি ?
যোগ্যতা – কি তার সীমারেখা
যদি হয় আসমুদ্রহিমাচল
তোমার পায়ের আংটি হবো
করবে কি ?