বসন্তকাল গত কিন্তু কাগজে কলমে এই কথা প্রমাণ করা যাবে না যেহেতু বর্ষপঞ্জিকায় বৈশাখ এখনো আসে নাই...। কি রকম যেন দিনগুলো, একটা গুমোট অস্থিরতা প্রকৃতিতে বিরাজমান বাতাসে জলের কণা ক্রমশই বাড়ন্ত আর তাতেই গেলো বসন্তে তৈরী হওয়া প্রেমিক মন রিক্ত হয় আর শরীর সিক্ত হয় লোনা জলে...। সুয্যিমামা এ সময় বড় বেহায়া হয়ে উঠে দিনে দিনে সকাল থেকেই যেন পোশাক খোলার প্রতিযোগীতায় নেমেছে সে...আরে বাবা তুই নিজে ন্যাংটো হবি হ' না তা না আমাদের ও ন্যাংটো করে ছাড়বে...কিন্তু আমারা কি আর এত বোকা আছি নাকি...সভ্য হয়েছিতো...তাই যতই খারাপ লাগুক বিশেষ সময় ছাড়া সহজে ন্যাংটো হই না...সুয্যিমামাতো অনেক দূরে থাকে তাকে লজ্জা দেবার জন্য কোন সভ্য মানুষ তার পাশে নেই...কিন্তু আমাদের আছে - ন্যাংটো হবার লজ্জা। তবুও অন্যকে ন্যাংটো করতে আমাদের খারাপ লাগে না...। সুয্যিমামাটাও যেন কেমন, আমরা ছাড়া পৃথিবীর কে তাকে এমন সুন্দর করে মামা ডেকেছে...তবু আমাদের উপরই তার চরম আদর দেখানো চাই...সেও বুঝে গেছে বাঙ্গালী হল সহ্য ক্ষমতার আধার...তাই তাকে কিছু বলা যাচ্ছেনা...তবুও এবারের গরমটা খুবই অসহ্য ঠেকছে...নোন্তা জলের আবেশে পোশাক যেন গায়ের সাথে সংগমে লিপ্ত হতে চাচ্ছে...অথচ পছন্দ হচ্ছনা...পোশাক ছাড়া চলে না...আবার তার চুড়ান্ত মাখামাখিও ফাঁস লাগার মত মনে হয়...নিজ শরীর নিজ মনেই ঘিন ঘিন ঠাওরায়...সারা গা চিটচিট করে আর খিটমিট মেজাজ মুখে আনে অযথাই খিস্তি...তারপরও যখন লু হাওয়ায় ভর করে একটা স্বস্তি এসে শীতল পরশ দিয়ে যায় মাঝে মাঝে তখন সেই মাঝামাঝি সময়টাকে স্বর্গীয় মনে হয়...। এরপর সময়ের সাথে আমাদের আশা বেড়ে চলে একটু স্বর্গীয় জলের জন্য আমারা বলতে মানুষ আর প্রকৃতি সবাই বিশেষ করে বলতে হয় ঢাকার বৃক্ষসমাজের কথা...।গেল বর্ষার পর তারা এখন স্নান করতে পারেনি...পাতাগুলিতে ক্রমশই নির্জীবতা ভর করে উপরন্তু কল গাড়ির কালো ধোঁয়া তাদের সৌন্দর্যের উপর কালিমা লেপনে সদাই সিদ্ধহস্ত...এমনি যখন অবস্থা তখন হঠাত ঈশাণ কোনে হাল্কা জমাট বাষ্প দিনের আলোকে ম্লান করে দেয় যেন সহসাই সন্ধ্যা নামবে আর সেই সাথে থেমে থেমে চলে অদ্ভুত শীতল হাওয়া...রাস্তায় পরে থাকা কাগজ আর পলিব্যাগের মধ্যে ঘূর্ণন শক্তি জমা হয়, তারা যেন ঘুরে ঘুরে মাটি ফেলে আসমানের দিকে উঠতে চায়... প্রাচীন জটাধারী বৃক্ষ তার ভারী দেহ কে মাইকেল জ্যাক্সনের আদলে একটু দোলায় আর শীর্ণকায় বৃক্ষদের চলে ধ্রুপদী নৃত্যের কসরত ওদিকে যেন জলের আশায় বেড়ে যায় রিকশার ক্রিং ক্রিং...মোটর গাড়ির হর্ণ...যাপিত জীবনের আচমকা গতি বেড়ে যায়...অলি গলি তে ভর করে ঐশ্বরিক প্রান...তার টানেই বের হয়ে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা...তাদের কেন জানি আজ কোন শাসন মানতে ইচ্ছে করে না ...প্রকৃতির এই অন্তস্বত্তায় জনমনে জন্মায় চঞ্চলতা...প্রকৃতি, প্রান আর মানুষ এটাই যে সৃষ্টির নিগূঢ় তত্ত্ব তা যেন আবার বোধগম্য হয় ...বুঝতে পারি এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে আদিম ও চরম সম্পর্ক...
কিন্তু শেষ পর্যন্ত আজ জলের দেখা মিলে না...হাল্কা মেঘ উড়ে চলে যায়...বড় অস্থির কিনা...আর সেই সাথে সুয্যিমামার দাতঁগুলি বের হয়ে পড়ে কিন্তু আগের থেকে কোমল হয়ে ...একটা সোনালি আভা ছড়িয়ে পড়ে...দৃশ্যমান সকল বস্তুকে কাচাঁ সোনা মনে হয়...মনে হয় বৈজ্ঞানিকরা এই আলো দেখেই সোডিয়াম বাতি তৈরির কথা ভেবেছিলো.....। আজ় বৃষ্টি হলনা...কিন্তু আশা থেকে গেল সময় আর বেশি নেই...বৃষ্টি আসছে।।
(চলবে)
Friday, April 3, 2009
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment